জলবায়ু – গ্রীষ্মমন্ডলীয় অঞ্চলে পুঁইশাক জন্মে। গরম ও আর্দ্র আবহাওয়া এবং রোদ পুঁইশাক গাছের পছন্দ । কম তাপমাত্রায় গাছের বৃদ্ধি ও ফলন কম হয়।
মাটি – সুনিষ্কাশিত বেলে দোআঁশ থেকে এঁটেল দোআঁশ মাটিতে পুঁইশাক ভালো হয়।
জাত পরিচিতি- জান্নাত ১ মোটা ডগা পুঁইশাক, চিত্রা, বারি পুঁইশাক-২, মাধুরী, মনীষা, রুপশা গ্রীণ, কিয়ারা এবং সামার ওয়াল্ডার।
আবাদ উপযোগী এলাকা – সারা দেশে আবাদ করা যায় পুইশাক।
জমি তৈরি – আগাছা পরিষ্কারের পর ৫ থেকে ৬টি চাষ ও মই দিয়ে উত্তমরূপে জমি তৈরি করতে হয়।
বীজ বপনের সময়- ফাল্গুন থেকে জ্যৈষ্ঠ (ফেব্রুয়ারি থেকে মে) পর্যন্ত বীজ বোনা যায়। সাধারণত গ্রীষ্মকালে বর্ষায় এর চাষ ভালো হয়।
বীজ ভিজানো- বীজ ১২-১৫ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রেখে পরে জমিতে বুনতে হয়।
বীজ হার- প্রতি শতকে ৮-১০ গ্রাম বীজ দরকার।
বীজ বপন এবং চারা তৈরি
- কখনো কখনো বেডে চারা তৈরি করা হয়।
- বেডে সারি করে ১০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে বীজ পুঁতে বা ছিটিয়ে বীজ বুনে চারা তৈরি করা যায়।
- ফেব্রুয়ারি-মার্চে চারা তৈরির জন্য বেডে বা পলিব্যাগে বীজ বোনা হয়।
- বীজ গজানোর জন্য ১৮ থেকে ২১ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার দরকার হয়।
- সেজন্য শীত শেষে যখন তাপমাত্রা বাড়তে শুরু করে তখন বীজ বোনা ভালো।
- বীজ গজাতে তাপমাত্রা ও মাটির আর্দ্রতার ওপর ভিত্তি করে ১০ থেকে ২১ দিন সময় লাগে।
- এর কম সময়েও গজাতে পারে যদি বীজ এক রাত পানিতে ভিজিয়ে বোনা হয়।
- চারা দু সপ্তাহের হলে সেগুলো তুলে মূল জমিতে লাগানো যায় বা ফাঁকা জায়গা পূরণ করা যায়।
রোপণ দূরত্ব- পুঁইশাকের চারা রোপণের জন্য সারি থেকে সারি ৮০-১০০ সে:মি: এবং চারা বা বীজ ৪০-৫০ সেন্টিমিটার দূরে দূরে চারা রোপণ করতে হয়।
সারের পরিমান (শতকপ্রতি)
- গোবর ৬০ কেজি
- সরিষার খৈল ৫০০ গ্রাম
- ইউরিয়া ৮০০ গ্রাম
- টিএসপি ৫০০ গ্রাম
- এমওপি ৫০০ গ্রাম
সার প্রয়োগ পদ্ধতিঃ
- জমি তৈরির সময় সম্পুর্ণ টিএসপি বা ডিএপি, অর্ধেক পটাশ সার প্রয়োগ করতে হবে।
- প্রথম কিস্তি ইউরিয়া সার চারার বয়স ১৫-২০ হলে
- দ্বিতীয় কিস্তি ৩৫-৪০ দিন পর এবং প্রথমবার ফলন তোলার পর বাকি দুই কিস্তি এই মোট তিন কিস্তিতে উপরি প্রয়োগ করতে হবে।
সেচ – বর্ষায় সাধারণত সেচ দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। মাটিতে রস না থাকলে অবশ্যই সেচ দিতে হবে। প্রায়ই মাটি আলগা করে দিতে হবে।
আগাছা পরিষ্কার ছাঁটাই – নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করতে হয়।
মাচা বা বাউনি- ফলন বেশি পেতে হলে বাউনি বা মাচা দিতে হবে।
আগা কর্তন– চারা ২৫-৩০ সেন্টিমিটার উঁচু হলে আগা কেটে দিতে হয়। এতে গাছ ঝোপালো হয়।
রোগবালাই- পাতায় দাগ রোগ (বীজ বাহিত) ও কান্ডের গোড়া পচা রোগ। দমন ব্যবস্থা- কার্বেন্ডাজিম গ্রুপের ছত্রাকনাশক ব্যাভিষ্টিন বা নোইন ২ গ্রাম/লিটার পানিতে মিশিয়ে ১০ দিন পর পর স্প্রে করতে হয়।
ফসল তোলা- বীজ বা চারা রোপনের ৪৫-৫০ দিন বয়সে পুঁই শাক সংগ্রহ করা যায়। একবার চারা লাগিয়ে এক মৌসুমে ৮ থেকে ১০ বার পুঁইশাক সংগ্রহ করা যায়।
ফলন– ফলন প্রতি হেক্টরে ৬০-৭৫ টন। শতকে ২০০-৩০০ কেজি।
মোঃ ফরিদুল ইসলাম, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা, ব্লকঃ ভোটমারী, কালিগঞ্জ, লালমনিরহাট এর ফেসবুক থেকে নেওয়া।
Discover more from কৃষি প্রতিদিন
Subscribe to get the latest posts sent to your email.