ঘরে বসেই গড়ে তুলুন লাভজনক পাখি খামার।
নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশের গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের অনেক বাড়িতেই কবুতর পালনের চিত্র এখন সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গৃহপালিত পাখির মধ্যে কবুতর সবচেয়ে জনপ্রিয় ও শান্তিপ্রিয় একটি প্রাণী।
যুগ যুগ ধরে কবুতর পালন করা হয়েছে—কখনো বার্তাবাহক হিসেবে, কখনো শখের বসে, আবার বর্তমানে লাভজনক বাণিজ্যিক খামার হিসেবেও।
কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু এবং বলকারক। ফলে বাণিজ্যিক ভাবে কবুতর পালন করে কম সময়ে লাভ করা যায়। কবুতর সাধারণ ভাবে জোড়া বেঁধে বাস করে। প্রতি জোড়ায় একটি পুরুষ এবং একটি স্ত্রী কবুতর থাকে।
এরা ১২-১৫ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে। যতদিন বেঁচে থাকে; ততদিন ডিমের মাধ্যমে বাচ্চা দিয়ে থাকে। ডিম পাড়ার পর স্ত্রী-পুরুষ পর্যায়ক্রমে ডিমে তা দিয়ে থাকে।
কবুতরের ইতিহাস ও সহজ পালনযোগ্যতা
প্রাচীনকালে কবুতর পালন করা হতো চিঠি আদান-প্রদানের জন্য। কবুতরকে বলা হয় ‘শান্তির দূত’। অতীতের তুলনায় এখন কবুতর পালন সহজতর এবং অর্থনৈতিকভাবে বেশ উপকারী।
সহজেই পোষ মানানো যায়, খাবারের জন্য খুব বেশি খরচ হয় না এবং ছোট জায়গাতেই পালন সম্ভব হওয়ায় অনেকেই এটি ঘরে বসে আয় করার মাধ্যম হিসেবে নিচ্ছেন।
কবুতর পালনের প্রধান সুবিধাসমূহ
১. উচ্চ উৎপাদন ক্ষমতা: একটি ভালো জাতের কবুতর বছরে গড়ে ১২ জোড়া ডিম দেয়, যার অধিকাংশ থেকেই বাচ্চা ফুটে। প্রতি ডিম থেকেই উৎপন্ন বাচ্চা ৪ সপ্তাহের মধ্যে খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে।
২. কম জায়গায় পালনযোগ্য: কবুতর এমন এক পাখি যা খুব অল্প জায়গাতেও লালন করা সম্ভব। ঝোলানো ঝুড়ি, ছাদের কোণ, কিংবা ছোট কাঠের ঘরেই সহজে কবুতর পালন করা যায়।
৩. খাবারের জন্য বাড়তি খরচ নেই: বেশিরভাগ কবুতর নিজের খাবার নিজেই সংগ্রহ করতে সক্ষম। ফলে খাবারের পেছনে অতিরিক্ত ব্যয়ের প্রয়োজন পড়ে না।
৪. ঘর তৈরি করা সহজ: কবুতরের জন্য বিশেষ কোনো ঘরের প্রয়োজন হয় না। ছাদে বা উঠোনে কাঠের ঘর কিংবা ঝুড়িতে করেও পালন করা সম্ভব।
৫. দ্রুত বংশবৃদ্ধি: ডিম দেওয়ার মাত্র ১৮ দিনের মধ্যে বাচ্চা ফুটে যায়। কবুতরের বাচ্চারা ৫–৬ মাস বয়সেই ডিম দেওয়া শুরু করে, ফলে দ্রুত বংশ বৃদ্ধি ঘটে।
৬.পুষ্টিগুণে ভরপুর: কবুতরের মাংস অত্যন্ত সুস্বাদু ও বলকারক। এটি মুরগির মাংসের বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করা হয় এবং রোগীর পথ্য হিসেবেও বেশ জনপ্রিয়।
৭. কম সময়ে লাভ: সঠিক পরিচর্যা ও ব্যবস্থাপনায় খুব কম সময়ের মধ্যেই কবুতর পালন থেকে আয় করা সম্ভব। বিশেষ করে শহরাঞ্চলে এর মাংস ও বাচ্চার ভালো বাজার রয়েছে।
উপসংহার:
যদি আপনি অল্প পুঁজিতে একটি লাভজনক খামার গড়ে তুলতে চান, তবে কবুতর পালন হতে পারে একটি চমৎকার উদ্যোগ। এতে যেমন সময় কম লাগে, খরচও তেমন কম হয়। একই সঙ্গে আপনি একটি স্বাস্থ্যকর প্রাণী লালন করে পরিবারের পুষ্টির চাহিদাও মেটাতে পারবেন।
Discover more from কৃষি প্রতিদিন
Subscribe to get the latest posts sent to your email.