সৌদি আরবে ব্যর্থতার পর দেশে ফিরে মরিয়ম খেজুরের বীজ রোপণ করে সাফল্যের মুখ দেখছেন কালীগঞ্জের শোকর আলী। ছোট গাছে এসেছে সাতটি ছড়া, শুরু হয়েছে চারা বিক্রি।
নিউজ প্রতিবেদন
সাতক্ষীরা জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার মৌতলা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত গ্রামে ‘খেজুরবাড়ি’ নামে পরিচিত এক বাড়িতে চলছে সৌদি খেজুরের সফল চাষ। মালিক শোকর আলী। বয়স ষাটের কাছাকাছি। তাঁর বাড়ির উঠোন জুড়ে রয়েছে শত শত মরিয়ম জাতের সৌদি খেজুরগাছের চারা। এরই মধ্যে একটি মাত্র চার বছর বয়সী গাছে এসেছে সাতটি খেজুরের থোকা—যা দেখে আশাবাদী হচ্ছেন আশপাশের মানুষ।
শোকর আলী একসময় জীবিকার তাগিদে পাড়ি জমিয়েছিলেন সৌদি আরবে। সেখানে ছয় বছর খেজুরবাগানে কাজ করার অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। ভাগ্য না ফেরায় দেশে ফিরে আসেন, সঙ্গে আনেন মরিয়ম খেজুরের বীজ। সেই বীজ রোপণ করে নিজের আঙিনায় তৈরি করেন একটি খেজুর নার্সারি।
তিনি জানান, তাঁর বাড়ির ১৫ কাঠা জমির মধ্যে ১২ কাঠায় লাগিয়েছেন খেজুরগাছ। বর্তমানে তাঁর নার্সারিতে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় ১৬ হাজার চারা রয়েছে। প্রতিটি চারা ২০০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা তাঁর নার্সারিতে আসছেন। ব্যবসা সম্প্রসারণে তিনি আরও দুই বিঘা জমি ইজারা নিয়েছেন।
ফল আসার গল্প
শোকর আলীর দেখানো গাছটির উচ্চতা মাত্র পাঁচ ফুট। এই ছোট গাছেই ধরেছে সাতটি ছড়া। প্রতিটি ছড়ার ওজন প্রায় তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি। বাঁশের ফালি দিয়ে ছড়াগুলোকে ওপরের দিকে ধরে রাখা হয়েছে, যেন মাটিতে না লাগে।
তাঁর ভাষায়, “আমি সৌদি আরবে ছয় বছর কাজ করেছি, কিন্তু কিছু করতে পারিনি। এখন সেই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে সাফল্যের পথে হাঁটছি। খেজুরগাছ চাষে বিশেষ পরিচর্যার প্রয়োজন হয় না। দেশি গাছের মতোই পরিচর্যা করলেই হয়।”
খেজুর চাষে ভবিষ্যতের আশা
শোকর আলী আশা প্রকাশ করেন, আগামী কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি বাণিজ্যিকভাবে খেজুর বাজারজাত করতে পারবেন। গাছে ফল আসার তিন মাসের মধ্যেই খেজুর পাকবে বলে তিনি জানান।
কৃষি কর্মকর্তার মতামত
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওয়াসীম উদ্দীন বলেন, “গাছে ফল আসা ইতিবাচক ইঙ্গিত। যদি এই জাতটি কার্যকর প্রমাণিত হয়, তবে ভবিষ্যতে বসতবাড়িতে পরীক্ষামূলকভাবে খেজুরচাষে মানুষকে উৎসাহ দেওয়া হবে।”
Discover more from কৃষি প্রতিদিন
Subscribe to get the latest posts sent to your email.